সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
পাটের হারানো গৌরব ফেরাতে সরকার বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহন করছে। কৃষকদের পাটজাত পন্য সারা দেশে আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে পাটের মূল্য বোধ বেগবান করার লক্ষে বিভিন্ন পন্যকে প্রক্রিয়াজাত করার জন্য পাটের মোড়কিকরণ বাধ্যতামূলক করা হয় ২০১০ সালে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে। কিন্তু বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা ৭ টি পন্যের উপর উচ্চ আদালতে প্রায় ৩৫ টি রিট করেন এবং আদালত তাদের পন্যর উপর স্থগিত আদেশ দেন।
তবে সারা দেশে বিভিন্ন শহরের আড়ৎ গুলোতে পাটের জন্য নির্ধারিত পন্য আসে পিপি ব্যাগে।
গত ৮ মে দৈনিক সংবাদর্চচায় নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জের নিষিদ্ধ পিপি ব্যাগের সয়লাভ নামে সংবাদ প্রকাশের পর গতকাল দুপুরে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান পরিচালনা করে। এসময় ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন বেশ কয়েকটি দোকানকে।
এসময় ফতুল্লার এসিল্যান্ড ও ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, বিধি অমান্য করে খাদ্যের মোড়কে পিপি ব্যাগ ব্যবহারের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়। আমরা এ অভিযান করছি যারা বিধি অমান্য করে তাদের প্রাথমিক ভাবে অর্থদন্ড দেয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ জুট মিল অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমসি)এর যুগ্ম সম্পাদক তারা সংকর রায় দৈনিক সংবাদচর্চা জানায়, ২০১০ সালেই শুরু হয়েছে এই প্রজ্ঞাপন । আমরা এই প্রজ্ঞাপনের বাস্তবায়ন চাই তাহলে পাটের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে।
নারায়ণগঞ্জ পাট অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো.সিরাজুল মওলা জানায়, পাটের মোড়কিকরণ বাস্তবায়নে ৫ টি পন্যের উপর আমরা ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করে থাকি। এছাড়া উচ্চ আদালতে যে সকল পন্য বিষয়ে রিট করা হয়েছে সে সকল পন্য ছাড়া বাকি পন্যের বিষয়ে আমাদের মাঠকর্মীরা পরিদর্শন করে থাকে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট যুথিকা সরকার জানান, যে সকল পন্যে মোড়কিকরণের উপর রিট রয়েছে সে গুলো ছাড়া বাকি পন্যে জন্য পাটের মোড়কী করণ বাধ্যতামূলক। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়ম অনুযায়ী প্রতিমাসে জেলা শহরে ৩ বার অভিযান ও উপজেলা গুলোতে বিভিন্ন সময় আভযান পরিচালনা করে থাকি ।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয়ের পাট অধিদপ্তরের সমন্বয়ক শওগাতুল আলম দৈনিক সংবাদচর্চাকে জানায়, ১৭ পন্যে মোড়কী করণ বাধ্যতামূলক করা হলে ব্যবসায়ীরা হাইকোটে ৭ টি পন্য চিনি, ডাল, আট, ময়দা তুষ-খুদ-কুঁড়া, পলি ফিসে রিট করেন। উচ্চ আদালতে প্রায় ৩৫ মামলা করেছেন ৭ পন্যের উপর ব্যবসায়ীরা তবে যারা মামলা করেছেন আদালত তাদের রিট অনুযায়ী তাদের পন্যে ক্ষেত্রে স্থগিত আদেশ দিয়েছেন। এছাড়া বাকি পন্য ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার, মরিচ, হলুদ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন,ধনে,আলুর প্রক্রিয়াজাত করার জন্য পাটের মোড়কীকরণ বাধ্যতামূলক রয়েছে।
জানা যায়,পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার বিধিমালা, ২০১৩ সংশোধন করে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা করেন। ১১টি পণ্য সংরক্ষণ, সরবরাহ ও মোড়কিকরণে পাটজাত মোড়কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে সরকার। পণ্যগুলো হচ্ছে মরিচ, হলুদ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ডাল, ধনে, আলু, আটা, ময়দা, তুষ-খুদ-কুঁড়া।
শুরুর দিকে ছয় পণ্যে ২০ কেজি বা তার বেশি পরিমাণ পণ্য পরিবহন ও সংরক্ষণে পাটের ব্যাগ ব্যবহার করলেই চলত। তবে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে সেটি বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রণালয়। তখন যেকোনো পরিমাণ ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনি পরিবহন ও সংরক্ষণে পাটের ব্যাগ ব্যবহারে কড়াকড়ি করা হয়।